বেনারসের অলিগলি - Lanes Of Varanasi






राड़ सांड सिड़ि सन्यासी
चारों मिलें तों होबे काशी ।

ষোড়শ মহাজন পদের এক জনপদ কাশি বর্তমানে যা বারাণসী বা বেনারস । গত বছরের অগাস্ট মাসে হটাৎ করেই যাওয়ার সুযোগ হয় বেনারসে । প্রচলিত ঐ লাইন দুটো যে ভুল কিছু না সেটা বুঝতে খুব একটা বেগ পেতে হয় নি । অলিতে গলিতে ষাড়ের আনাগোনা খুবই সাধারণ , আর খেয়াল করলেই দেখা যাবে প্রতিটা বাড়ি , দোকান পসারের প্রবেশ পথে অন্তত দুটো হলেও সিড়ি আছেই । এছাড়া ' রাঢ় ' ? জনবহুল নগর গুলিতে প্রাচীন কাল থেকেই এই নগর বধূদের রমরমা বেনারস ও তার ব্যতিক্রম নয় । প্রাচীন কাল থেকেই ভারতের জনবহুল নগর গুলির মধ্যে বারানসী বা কাশি অন্যদের দের থেকে আলাদা । মগধ রাজ হরযাঙ্ক বংশীয় বিম্বিসারের সময় থেকে মহাজনপদ গুলির মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াই শুরু হয়ে যায় । বৈদিক পুরান মতে প্রাচীনতম এই জনপদেই দেবাদিদেব মহাদেব অধিষ্ঠান করেন। লোককথা অনুসারে কাশি বিশ্বনাথের এই নগরকে অধিকার করার চেষ্টা করলে সেই রাজাকে মহাদেব ধ্বংস করে দেন । তাই হয়তো মৌর্য শাসনকালেও বারানসী ছিল স্বতন্ত্র একটি নগরী। সহস্র বছর ধরে ঐশ্বর্যশালী সম্রাট থেকে রিক্ত জীর্ণ ভিক্ষুক সকলেই বিনা বাঁধাতে উপস্থিত হয়েছেন এই নগরীতে । মহাভারত মতে যুদ্ধ শেষে ভাতৃ ও ব্রাহ্মণ হত্যার পাপ স্খলনেরর জন্য পাণ্ডবেরাও গেছিলেন এই তীর্থ স্থানে । বারানসীর অনতিদুরেই সারনাথ , যেখানে গৌতম বুদ্ধ প্রথম ধর্মপ্রচার সুরু করেছিলেন । শুধু হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মেরই না জৈন সম্প্রদায়ের কাছেও কাশি এক পবিত্র স্থান , তেইশ তম জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথের জন্মস্থল এই কাশি । কথিত আছে সপ্তপুরির এক পুরী এই কাশি ধামে মৃত্যু হলে তার স্বর্গ বাস হয় । তাই আজও বহু বৃদ্ধ বৃদ্ধা , পঙ্গু মানুষেরা ভিড় করে এই নগরের পথে ঘাটে । এভাবে কাশি বেনারসের বিশেষত্বের শেষ হওয়া কঠিন । যত সময় গেছে এই নগররে রমরমা বেড়েছে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে মানুষের আনাগোনা হয়েছে । বারানসীর অন্যতম আকর্ষণ হল গঙ্গার তীরে অবস্থিত অসংখ্য মন্দির , প্রাসাদ , দেউল ও বিশাল ঘাট । ২০১৫ সালে মাসান ফিল্মে প্রথম বেনারসের ঘাট ফেখে মুগ্ধ হয়েযায় । তার চার বছর পরে সচক্ষে দেখার সুযোগ হলেও গঙ্গা নদী সে পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো । সেবার গঙ্গার বানে ডুবে গেল সব ঘাট । স্থানীয় একজনের কাছে জানতে পারি এরকম ঘটনা গত প্রায় ত্রিশ বছরে ঘটেনি । মনে দুঃখ থাকলেও সেটাকে অনেক টাই কমিয়ে দিয়েছিল গঙ্গার ওপারের বিশাল রামনগরের দুর্গ ও আমার ঠাই ‘স্বামীবাগ’ । রামনগর দুর্গ নিয়ে না হয় আরেকদিন বলা যাবে । তবে বলে রাখি ‘স্বামীবাগ’ হল একটি ধর্মীয় আশ্রম । সত্যি বলতে সম্পূর্ণ বারানসীতে এর থেকে শান্ত পরিবেশ কোথাও আছে বলে মনে হয়নি । বেনারস নগরের ধর্মীয় ভক্তি বা বিশৃঙ্খলতাকে সরিয়ে দিলেও যেটা সকল কে অবাক করে দেয় সেটা হল নগরের অলিতে গলিতে ভরপুর বৈচিত্র্যতা । একজন বলেছিল -

'बने बने हुए रस , बनारस'

কথাটার আসলে কি অর্থ তা নিয়ে আমি অনিশ্চিত হলেও এটা আমাকে মনে করায় যে বেনারসের রস আস্বাদন আমার অনেকটাই বাকি । তার জন্য আরেকবার অন্তত ফিরে যেতে হবে বারানসীতে ।



























Post a Comment

0 Comments